পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কেন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কেন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

পত্রদূত প্রতিনিধিঃ তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার পাকিস্তানে পৌঁছেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। পাকিস্তানের সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে দুই দেশের সম্পর্ক ও বাণিজ্য জোরদারে বিভিন্ন ইস্যুতে আটটি চুক্তি সই করেছে ইসলামাবাদ ও তেহরান। রাইসির ইরানে ফিরে যাওয়ার আগে আরও কয়েকটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। তবে দুই দেশের এ সম্পর্ক ভালোভাবে নিতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি সই করায় ইতোমধ্যেই পাকিস্তানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, কোনো দেশ ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করার আগে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। তেহরানের সঙ্গে বাণিজ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, কৃষি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি ও বিচার বিভাগসংক্রান্ত অন্তত আটটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সই স্বাক্ষর করেছে ইসলামাবাদ। এ স্বাক্ষরের পরপরই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকিতে পড়ে পাকিস্তান। ওয়াশিংটনের সঙ্গে ইসলামাবাদের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে ওই মুখপাত্র বলেন, পাকিস্তানের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার ও দেশটিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগকারী দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। আমরা গত ২০ বছর ধরে পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছি। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সাফল্যের সঙ্গে আমাদের দুই দেশের স্বার্থ জড়িত। আমরা আমাদের এই অংশীদারত্ব অব্যাহত রাখব।তবে তেহরানের সঙ্গে ইসলামাবাদের ঘনিষ্ঠতা ও দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া দ্বিপক্ষীয় চুক্তির কারণে ইসলামাবাদ-ওয়াশিংটনের সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মকর্তা। এমনকি, বিশ্বে ইরানের অবস্থানের কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। এমন একসময় যুক্তরাষ্ট্রের এই সতর্কবার্তা এলো, যখন অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান বৈদেশিক বিনিয়োগ ও সহায়তার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অনেকে বলছেন, পাকিস্তানের এই দুঃসময়ে সাহায্যের হাত বাড়াতে চাচ্ছে ইরান। যদিও এখানে উভয় দেশেরই স্বার্থ রয়েছে। তাছাড়া পাকিস্তান সব সময়েই ইরানকে ভ্রাতৃসুলভ দেশ বলে মনে করে। চলতি বছরের জানুয়ারির দিকে দ্বন্দ্বে জড়ালেও প্রতিবেশী এ দুদেশ শিগগিরই তা মীমাংসাও হয়ে যায়। তবে এই সতর্কবার্তা সত্ত্বেও তেহরান এবং ইসলামাবাদ দুই দেশ বাণিজ্য, প্রযুক্তি, কৃষি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি এবং বিচারিক বিষয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক পরবর্তী এক ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট জানান, পাকিস্তান ও ইরান উভয়েই দুদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করতে সম্মত হয়েছে।

আরো পড়ুন


ফেইসবুক

ভিডিও